আজকাল অনেকেই ইন্টারনেটে যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় খুঁজে থাকে। এর কারণ হলো আমরা লজ্জার কারণে এই ব্যাপারে কারো সাথে খোলামেলা কথা বলতে চাই না। তবে আপনার মনে রাখতে হবে যৌন সমস্যা লজ্জার কোন বিষয় নয়।
অধিকাংশ সময় দেখা যায় যৌন অশান্তির কারণে সংসারে বিভিন্ন ধরনের ঝগড়াঝাঁটি এবং কি বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়। যদি আপনি আগে থেকেই সতর্ক থাকতে পারেন তাহলে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হবে না। যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য আলাদা করে কোন ঔষধ এর প্রয়োজন নেই আপনার নিয়মিত খাবার-দাবারের মাধ্যমে যৌনশক্তি বৃদ্ধি করতে পারবে।
আপনার খাবার মেনু তে নিয়মিত ডিম,দুধ, এবং মধু রাখুন আর নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করুন, তাহলে যৌন দুর্বলতায় ভুগবেন না। এছাড়াও যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে রয়েছে আরো কিছু উপায়। আজকের আর্টিকেলে আমরা যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই চলুন দেরি না করে এখনই আর্টিকেল শুরু করা যাক:
যেসব কারণে পুরুষের যৌনক্ষমতা কমে যাচ্ছে
১। ধূমপান ও মদ্যপান:
ধূমপান এবং মধ্যপান আমাদের সমাজে দিনে দিনে যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে । এছাড়াও অনেকে আছে সাথে আরো ক্ষতিকর অনেক নেশায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল পুরুষের ইডি বা লিঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যা আছে তাদের অধিকাংশই ধূমপান বা মদ্যপান এ আসক্ত।
২। দুশ্চিন্তা:
সকল স্ত্রী পুরুষের জীবন সঙ্গী হতে পারে না বরং দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় । স্ত্রীর নানারকম জ্বালা-যন্ত্রা পুরুষের সকল মানুষের ও শারীরিক ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে বাদ যায়না যৌন শক্তিও।
৩। ওজন নিয়ন্ত্রণ:
ওজন বেশি থাকলে যৌন সঙ্গমের ইচ্ছাও কমে যেতে থাকে। আবার ওজন কম থাকাও ভালো নয়! ওজন স্বাভাবিকের থেকে কম থাকলে সেটাও যৌন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৪। ব্যায়াম না করা:
এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের যৌনক্ষমতা অন্যান্যদের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়, যা আপনার যৌনাকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৫। ড্রাগ:
যারা ড্রাগ আসক্ত, তাদের বেশিরভাগই ধীরে ধীরে যৌন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। এছাড়াও কিছু ঔষধ আছে (ব্যথানাশক, গর্ভরোধী) যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আপনার যৌনক্ষমতা কমিয়ে আনে।
৬। বদহজম:
বদহজমের কারনে যৌনশক্তি নষ্ট হতে পারে কারণ বদহজম হলেও শরীরে রক্ত উৎপাদন হয় না।
০৭। দুর্বল যকৃত:
যকৃত দুর্বল হওয়ার কারণে যৌনশক্তি কমে যায়। এর কারণ হলো, কলিজা হলো মানুষের শরীরের রক্ত প্রস্ততকারীর অন্যতম একটি উপাদান। বিশেষ করে যকৃতের কাজই হলো রক্ত তৈরী করা। যকৃত দুর্বলের লক্ষণ হলো—মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাওয়া। শরীরের রঙ হলদে হলদে হয়ে যাওয়া। সহবাসের সময় উত্তেজনা কমে যাওয়া। এসব যখন দেখা দিবে, তখন বুঝতে হবে যে, তার যকৃত দুর্বল হয়ে গেছে।
০৮। মস্তিঙ্কের দুর্বলতা:
মস্তিষ্কের দুর্বলতার কারণে অনেকের যৌন শক্তি কমে যায়। তখন যৌনশক্তির শিরার শক্তি কমে যায় সহবাসের পর অনেক ক্লান্ত অনুভব করে এবং অন্ধকার হয়ে আসে । সহবাসের পর যদি আপনার ক্লান্ত দিক বেড়ে যায় তাহলে বুঝতে পারবেন মস্তিষ্কের দুর্বলতা রয়েছে যার কারণে আপনার যৌনশক্তি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
যৌন শক্তি বাড়ানোর উপায়
যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বাজারে অনেক ওষুধ পাওয়া যায়। কিন্তু এটা আমরা সবাই জানি যে সকল ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। তাই ফার্মেসিতে যে ওষুধগুলো পাওয়া যায় সেগুলো খাওয়া কখনোই ঠিক না। এ সকল ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এতই বেশি যে আপনি সারা জীবনের মতো আপনার যৌন ক্ষমতা হারাতে পারে না। তাই সব সময় চেষ্টা করা উচিত প্রাকৃতিক উপায়ে যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর। চলুন জেনে নেই প্রাকৃতিক উপায়ে যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়-
০১। মধু:
সারা জীবন যৌবন ধরে রাখার ও যৌন শক্তির বৃদ্ধির সবচাইতে কার্যকর উপাদান হচ্ছে মধু। সকালে খালি পেটে জিহ্বা দ্বারা মধু চেটে খেলে পাকস্থলী পরিস্কার হয়, গ্রন্থ খুলে দেয়,মস্তিস্ক শক্তি লাভ করে, স্বাভাবিক তাপে শক্তি আসে, রতি শক্তি বৃদ্ধি হয়, মূত্রথলির পাথর দূর করে, কফ দূর হয়, দেহের অতিরিক্ত দূষিত পদার্থ বের হয়, পাকস্থলী স্বাভাবিক হয়ে যায়, প্রস্রাব স্বাভাবিক হয়, গ্যাস নির্গত হয় ও ক্ষুধা বাড়ায়। মধুতে রয়েছে হাজারো রকম ফুল ও দানার নির্যাস।
০২। খেজুর:
খোরমা ও খেজুরের সঙ্গে বিশেষ যৌন শক্তির সম্পর্ক রয়েছে। বিবাহ-শাদীতেএ কারনেই খোরমা-খেজুর বিলি করার আদিম রীতি চলে আসছে। খেজুর খেলে পিপাসা দূর হয়। অধিকাংশ হালুয়া তৈরীতে এ কারণেই খোরমা ও খেজুর ব্যাবহার করা হয়। চিকিতসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গ্রন্থেও খোরমা ব্যবহার যৌন শক্তির জন্য উপকারী বলা হয়েছে।
০৩। ডিম ও দুধ:
সকালের নাস্তায় প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে শরীরে সকল ধরনের দুর্বলতা দূর হওয়ার পাশাপাশি যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়।সকাল বেলা একটি সেদ্ধ ডিম খেলে সারাদিন শরীরে শক্তি পাওয়া যায়। কারণ সেদ্ধ ডিমে আছে প্রোটিন, ভিটামিন, ও শরীরের জন্য উপকারী চর্বি উপাদান। তাড়াহুড়ার সময় যদি নাস্তা খাওয়ার সময় না থাকে তাহলেও একটি সেদ্ধ ডিম খেয়েই সেরে নিন সকালের নাস্তা। সেদ্ধ ডিমে আছে ভিটামিন, প্রোটিন ও শরীরের জন্য উপকারী চর্বি উপাদান।
দুধ যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকর একটি উপাদান বিশেষ করে ছাগলের দুধ খেলে পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়।
০৪। পালং শাক :
পালং শাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়াম শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। জাপানের গবেষকদের মতে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়লে যৌন উদ্দীপনাও বাড়ে। পালং শাক ও অন্যান্য বিভিন্ন রকম শাক,ফুলকপি, বাঁধাকপি,ব্রকলি, লেটুস, এগুলোতে রয়েছে ফলেট, ভিটামিন বি সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো সুস্থ যৌন জীবনের জন্য বেশ কার্যকর।
০৫। রসুন:
রসুন অনেক উপকারী গুণাগুণ সম্পন্ন। রসুন বীর্য বৃদ্ধি করে, ঋতুস্রাব চালু করে, ফোড়া ভালো করে, পাকস্থলী থেকে গ্যাস নির্গত করে,পাকস্থলী ও গ্রন্থর ব্যাথার উপকার সাধন গরম স্বভাব লোকদের বীর্য গাঢ় করে,প্রস্রাব স্বাভাবিক করে, নিস্তেজ লোকদের মধ্যে যৌন ক্ষমতা সৃষ্টি করে।
০৬। স্ট্রবেরি:
স্ট্রবেরি দেহের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে বিধায় শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টিঅক্সিডেনট যা পুরুষের স্পারমের সংখ্যা বৃদ্ধি করে।
০৭। কলা:
কলায় আছে ব্রমেলাইন নামক একটি এনজাইম যা পুরুষের যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এতে আছে প্রচুর পরিমাণে রিবফ্লাবিন ও পটাশিয়াম যা শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে দেহকে সুস্থ রাখে এবং বীর্যের মান উন্নত করে।
০৮। তরমুজ:
তরমুজ কে মূলত প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা বলা হয়ে থাকে। এক গবেষণায় জানা গিয়েছে যে তরমুজে রয়েছে এমন কিছু বিশেষ উপাদান যা দেহের যৌন উত্তেজনা বাড়াতে সাহায্য করে।
০৯। বাদাম:
সকল ধরনের বাদামেই আছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল ও ফ্যাট যা দেহের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে এবং বীর্য তৈরি ও ঘন হতে সাহায্য করে। এর মধ্যে চিনা বাদাম, এ্যলমন্ড (কাঠ বাদাম) পেস্তা বাদাম,কাজু বাদামখাওয়া বেশি ভাল।
১০। তৈলাক্ত মাছ:
তৈলাক্ত মাছের রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড যা যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকর। বিশেষ করে সমুদ্রের মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড বেশি পাওয়া যায়। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড DHA O EPA শরীরে ডোপামিন বাড়িয়ে দেয় এবং মস্তিষ্কে উদ্দীপনা জাগিয়ে তোলে। তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং গ্রোথ হরমোনের নিঃসরন হয়। ফলে যৌন স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। একমাত্র খাদ্যই পারে আপনার শরীরের ভিতরে জটিল যে কোন সমস্যা সমাধান করতে। বাজারে বিক্রি করা ওষুধের সাহায্য না নিয়ে এই সকল পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে খুব সহজে আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে পারবেন। চলুন কিছু খাবারের নাম জেনে নেই যা যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে-
ডিম:
যৌন দুর্বলতা দূর করতে ও যৌন উত্তেজনা বাড়াতে এক অসাধারণ খাবার দুধ। প্রতিদিন সকালে, না পারেন সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ১টি করে ডিম সিদ্ধ করে খান। এতে আপনার যৌন দুর্বলতার অনেক কমে যাবে ।
দুধ:
যে সকল খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ-ফ্যাট আছে এমন প্রাকৃতিক খাদ্য আপনার যৌনজীবনের উন্নতি ঘটায়। যেমন, খাঁটি দুধ, মাখন,দুধের সর ইত্যাদি। অধিকাংশ মানুষ ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলে। কিন্তু আপনি যদি শরীরে সেক্স হরমোন তৈরি হওয়ার পরিমাণ বাড়াতে চান তাহলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাবারের দরকার। তবে সবগুলোকে হতে হবে প্রাকৃতিক এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
মধু:
যৌন দুর্বলতার সমাধানের মধুর গুণের কথা সবারই কম-বেশি জানা। তাই যৌন শক্তি বাড়াতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩/৪ দিন ১ গ্লাস গরম পানিতে ১ চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে পান করুন।
রসুন:
যৌন সমস্যা থাকলে এখনই নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। স্মরণাতীতকাল থেকেই নারী পুরুষ উভয়েরই যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে এবং জননাঙ্গকে পূর্ণ সক্রিয় রাখতে রসুনের পুষ্টিগুণের কার্যকারিতা সর্বজনস্বীকৃত। রসুনে রয়েছে এলিসিন নামের উপাদান যা যৌন ইন্দ্রিয়গুলোতে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়।
কফি:
যৌন ইচ্ছা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কফি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কফিতে থাকা ক্যাফেইন যৌনতার মুড কার্যকর রাখতে সাহায্য করে ।
জয়ফল:
গবেষণায় দেখা গেছে, জয়ফল থেকে এক ধরনের কামোদ্দীপক যৌগ নিঃসৃত হয়। সাধারণভাবে এই যৌগটি স্নায়ুর কোষ উদ্দীপিত করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে আপনার যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। আপনি কফির সাথে মিশিয়ে জয়ফল খেতে পারেন, তাহলে দুইটির কাজ একত্রে পাওয়া সম্ভব।
চকলেট: ভালোবাসা ও যৌনতার সঙ্গে সবসময়ই চকলেটের একটা সম্পর্ক রয়েছে। এতে রয়েছে ফেনিলেথিলামিন (পিইএ) ও সেরোটোনিন। এ দুটি পদার্থ আমাদের মস্তিষ্কেও রয়েছে। এগুলো যৌন উত্তেজনা ও দেহে শক্তির মাত্রা বাড়াতে সহায়ক। পিইএ’র সঙ্গে অ্যানান্ডামাইড মিলে অরগাজমে পৌঁছাতে সহায়তা করে।
কলা:
কলার রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি ও পটাশিয়াম। ভিটামিন বি ও পটাশিয়াম মানবদেহের যৌনরস উৎপাদন বাড়ায়। আর কলায় রয়েছে ব্রোমেলিয়ানও। যা শরীরের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতেও সহায়ক। আর সর্বোপরি কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা যা আপনার দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে দীর্ঘসময় ধরে যৌন মিলনে লিপ্ত হলেও আপনার ক্লান্তি আসবে না।
ভিটামিন সি জাতীয় ফল:
যৌন ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইলে আপনি আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রঙিন ফলমূল রাখুন। কমলা লেবু, তরমুজ,আঙ্গুর, পিচ ইত্যাদি ফল যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটি গবেষণা দেখা গেছে, যদি একজন ব্যক্তি তার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় অন্তত ২০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে তাহলে তার স্পার্মের কোয়ালিটি উন্নত হয়। এসবের মধ্যে সবচাইতে উপকারী হচ্ছে তরমুজ।
গরুর মাংস: গরুর মাংসে প্রচুর জিঙ্ক থাকে। তাই আপনি যৌন জীবনকে আরো আনন্দময় করতে কম ফ্যাটযুক্ত গরুর মাংস খান। যেমন গরুর কাঁধের মাংসে, রানের মাংসে কম ফ্যাট থাকে এবং জিঙ্ক বেশি থাকে। এসব স্থানের মাংসের ১০০ গ্রামের মধ্যে ১০ গ্রাম জিঙ্ক থাকে।
যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এমন কিছু ভিটামিন
যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় হিসেবে আপনি কিছু ভিটামিন খেতে পারেন। এ সকল ভিটামিন ট্যাবলেট আকারে ফার্মেসিতে পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন খাবারে এই ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায়। এই ভিটামিনগুলো যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নিন সেই ভিটামিন গুলোর নাম-
ভিটামিন এ:
টেস্টোস্টেরন এর মতো সেক্স হরমোন প্রোডাকশনের জন্য ভিটামিন এ খুবই জরুরী। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পাশাপাশি বেশ কিছু খাবার থেকেও ভিটামিন এ গ্রহণ করা যায়। ডেইরি, মাছ, মাংস, কলিজা, গাঢ় সবুজ শাক সবজি, ডিম, হলুদ ও কমলা ফল ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন-এ আছে।
ম্যাগনেসিয়াম:
ম্যাগনেসিয়াম ঘুমে বেশ সাহায্য করে। যৌন ক্ষমতা বাড়াতেও বেশ কার্যকর। ডিম, কোকো,ব্রাউন রাইস,বাদাম, বীজ, , হোল গ্রেইন, এবং গাঢ় সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম আছে।
সেলেনিয়াম:
লিবিডো বাড়াতে সেলেনিয়াম মিনারেলটিও খুব কার্যকরী। প্রচুর পরিমাণে সেলেনিয়াম আছে ব্রাজিল নাটে। একটা খেলেই সারাদিনের চাহিদা মিটবে। এছাড়াও ব্রোকলি, মাশরুম, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, রসুন এবং সামুদ্রিক মাছে প্রচুর সেলেনিয়াম আছে।
জিংক:
ভেজিটেরিয়ানদের সাধারণত জিংক এর অভাব হয়ে থাকে। জিংক এর অভাবে যৌন ক্ষমতা কমে যায়। হোল গ্রেইন, লাল মাংস, সি ফুড, ডিম এবং পনিরে প্রচুর জিংক আছে।
ভিটামিন সি:
সর্দি-কাশি কমাতে সহায়ক ভিটামিন সি। পাশাপাশি যৌন ক্ষমতা বাড়াতেও ভিটামিন সি এর জুড়ি নেই। এছাড়াও ভিটামিন সি ফাটিলিটি বাড়ায়। সাপ্লিমেন্ট এর পাশাপাশি সব সবজি এবং ফলে ভিটামিন সি থাকে।মরিচ, কিউয়ি , টক ফল, বেরি, এবং সবুজ শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে ।
ভিটামিন ই:
ভিটামিন ই এনার্জি এবং স্ট্যামিনা বাড়াতে বেল কার্যকরী। সুস্থ যৌন জীবনের জন্যও ভিটামিন ই বিকল্প নেই।মার্জারিন, তৈলাক্ত মাছ,কলিজা, ডেইরি, এবং ডিমে প্রচুর ভিটামিন ই থাকে।
ভিটামিন বি১২:
যৌন স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে সঠিক পরিমাণে ভিটামিন বি১২, বায়োটিন এবং নায়াসিন গ্রহণ করতে হবে । হোল গ্রেইন রুটি, সি ফুড, মুরগির মাংস, বাদাম, ব্রাউন রাইস, ডিম এবং সবুজ শাকে প্রচুর ভিটামিন বি পাওয়া যায়।
আয়রন:
প্রতিদিনের এনার্জি ঠিক রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আয়রন। এছাড়াও যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি এবং অর্গাজমের জন্যও শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন থাকা জরুরী। লাল মাংস, সবুজ সবজি এবং হোল মিল ব্রেড, ডিমের কুসুম,ড্রাইড ফ্রুটে প্রচুর আয়রন আছে।
ক্যালসিয়াম:
ক্যালসিয়াম হাড়কে সুস্থ রাখে। সেই সাথে বেডরুমের পারফরমেন্স বাড়াতেও সহায়তা করে। দুধ, দই, পনির, সবুজ সবজি এবং কমলায় প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে।
ফসফরাস: ফসফরাস মিনারেলটি লিবিডো বাড়াতে সহায়ক। ডেইরি, ইস্ট, সয়াবিন, বাদাম, হোল গ্রেইন, ডিম, পোল্ট্রি, মাংস এবং মাছে প্রচুর ফসফরাস উপস্থিত থাকে। এক্সপ্রেস।
যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা
যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এমন কিছু খাবার রাখুন যা খুব দ্রুত আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি করবে। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত এমন কিছু খাবার রয়েছে যা যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সকল খাবার গুলো হল-
১)তরমুজ:
এই ফল ভায়াগ্রার সমান কাজ করে । একটি গবেষণায় দেখা গেছে তরমুজ শুধু শরীরের পানি শূন্যতা বা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে না এটি যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তরমুজের মধ্যে থাকা সিট্রোলিন অ্যামিনো অ্যাসিড লিবিডোর মাত্রা বাড়ায়। এর কারণে যৌন চাহিদা ও যৌন ক্ষমতা দুই-ই বাড়ে।
পেস্তা এবং আমন্ড:
আমন্ডে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই যুক্ত। ভিটামিন ই ইস্ট্রোজেন ও টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই আমন্ড খেলে যৌনাকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে তোলে। পেস্তা লিবিডো বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে । এটি তামা, ম্যাঙ্গানিজ,জিঙ্ক এর একটি বিশাল প্রাকৃতিক উৎস। পেস্তা শুক্রাণুর ঘনত্ব বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ।
জাফরান:
জাফরান যৌনশক্তি বৃদ্ধি ও উত্তেজনা স্বাভাবিক রাখতে এই ফলের ভূমিকা ব্যাপক। জাফরান মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও জাফরান রক্তে সেরোটোনিন ,ইস্ট্রোজেন ও অন্যান্য ফিল-গুড হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। তাই অনেক ফিটনেস এক্সপার্টই দুধে জাফরান মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন। লিবিডো বৃদ্ধিতে এই খাবার বিশেষ উপকারী।
ডার্ক চকোলেট:
প্রতি দিন দু’টুকরো করে ডার্ক চকোলেট রাখুন খাদ্যতালিকায়। কেবল লিবিডো বৃদ্ধিতেই সাহায্য করবে এমনই নয়, বরং দীর্ঘ দিন অনভ্যস্ত যৌন জীবনকেও খুব তাড়াতাড়ি ছন্দে আনে এটি। এতে রয়েছে এল-আর্জিনিন অ্যামিনো অ্যাসিড যা আমাদের শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক মাত্রায় রেখে সঞ্চালিত করে তোলে।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার:
শরীরে পটাশিয়াম কমে গেলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা যায়। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখলে তা লিবিডো বৃদ্ধি করতেও বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই কলা, শুকনো খুবানি, নারকেলের জল ইত্যাদি খাবার প্রতি দিন রাখুন খাদ্যতালিকায়।
সবশেষে ,
যৌন শক্তি বাড়ানোর জন্য যে সকল ঔষধ বাজারে পাওয়া যায় সকল ঔষধি ক্ষতিকর। মূলত যৌন শক্তি বাড়ানোর কোন ঔষধ এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। আপনি বাজারে যে সকল ওষুধ পাবেন এই সকল ঔষধ দ্বারা আপনার শরীরের ক্ষতি হবে। চেষ্টা করুন প্রাকৃতিক উপায়ে কিছু খাবার-দাবার ও কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে যৌন শক্তিকে ফিরে পেতে। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ দেখলে আপনার এই সম্পর্কে ধারণা হয়ে যাবে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি থেকে আপনি কিছুটা হলে উপকৃত হয়েছেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Pingback: অনলাইনে গেম খেলে টাকা ইনকাম করার উপায় ২০২৪ - Jene-Nin