ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার পদ্ধতি

প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার পদ্ধতি জেনে নেওয়া। বৈবাহিক অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের সবচাইতে মধুর মুহূর্ত হচ্ছে সহবাস। সহবাসের সময় স্বামী ও স্ত্রী উভয়েরই শারীরিক চাহিদা থাকে। তবে বর্তমান জেনারেশনের ছেলেদের একটি সমস্যা সবচাইতে বেশি দেখা দিচ্ছে সেটি হল সহবাসের সময় দীর্ঘ না করতে পারা। এজন্য স্ত্রীর চাহিদা অপূর্ন থেকে যায় যার কারণে দাম্পত্য জীবনে কোলাহলের সৃষ্টি হয়, এবং কি ডিভোর্স পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই শারীরিক দুর্বলতার কারণে অধিকাংশ পুরুষই দুশ্চিন্তায় ভোগে। শেষমেষ কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে বাজারে পাওয়া সস্তা কিছু ঔষধ ব্যবহার করে।

এ সকল ঔষধ ব্যবহারের ফলে শারীরিক ও মানসিক দুই দিক থেকেই ক্ষতি হয়। ইসলাম একটি সার্বজনীন ধর্ম। ইসলাম ধর্মে এমন কিছু নেই যা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়নি, সকল কিছু সমাধান এখানে পাবেন। ঠিক তেমনি ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন সমস্যা সমাধানের জন্য ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার পদ্ধতি রয়েছে।

এই সকল নিয়ম কানুন যদি আপনি সঠিকভাবে পালন করেন তাহলে আপনার দাম্পত্য জীবন সুখী হয়ে উঠবে। আজকের আর্টিকেলে আপনাদের ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব । তাই চলুন দেরি না করে এখনই আর্টিকেলটি শুরু করা যাক:

স্ত্রী সহবাসের নিয়ম

চলুন জেনে ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে:

১)নিয়ত করা:

ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলনের স্ত্রী সহবাসের প্রথম ধাপটি হলো নিয়ত করা। সহবাস হচ্ছে দুটি নর নারী পবিত্র মিলন, যার মাধ্যমে দুনিয়াতে সন্তান আসার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সহবাস ছাড়া সন্তান জন্মদান অসম্ভব। সন্তান জন্ম দান ছাড়াও দৈহিক ও মানসিক শান্তির জন্য সহবাসের প্রয়োজন। তাই সহবাসের আগে নিয়ত করা জরুরী। সহবাসের আগে এই নিয়ত টি করতে হবে, আল্লাহতালা যেন আমাদের দুইজনকে হারামে হাত থেকে রক্ষা করেন এবং শয়তানের থেকে দূরে রাখেন।

২) নামাজ পড়া:

প্রথম সহবাসের দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে নামাজ আদায় করা। এর আগে বিভিন্ন হাদিসে এসেছে, বাসর ঘরে ঢুকে স্ত্রীর সাথে সদয় ব্যবহার করা এবং স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে তার জন্য দোয়া করা। এরপরে দুধ বা শরবত পান করা। আর উচিত হচ্ছে, বাসরের পূর্বে স্বামী তার হাতকে স্ত্রীর মাথায় রাখবে এবং আল্লাহ তাআলার নাম নিবে ও দোয়া করবে। এবং আল্লাহ ও রাসূলের বানিতে এসেছে তা বলবে। এরপর স্বামী-স্ত্রীর দুই রাকাত মুস্তাহব নামাজ পড়বে। এই নামাজের তেমন সঠিক কোন নিয়ম নেই এবং বড় কোনো দলিল নেই যে নামাজ পড়তেই হবে। তবে অনেক হাদিস এই বাসর রাতে নামাজ পড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

সহবাসের সময় আদর সোহাগ করা:

সহবাসের দোয়া পড়ার পড়ে স্বামী তার স্ত্রীকে আদর সোহাগ করবে এ বিষয়টি হাদিসেও এসেছে। স্ত্রী সহবাসের পূর্বে অবশ্যই একে অপরকে আদর করা উচিত যেমন একে অপরকে জড়িয়ে ধরা, চুমু খাওয়া, একে অপরের হাত ধরা ইত্যাদি। এসব সহবাসের আগে দুইজনকে মিলনের প্রতি আরও বেশি আগ্রহী করে তুলবে যার ফলে সহবাস আরও বেশি মধুর হবে।

সহবাসের দোয়া পড়া:
সহবাসের পূর্বে দোয়া পড়া সুন্নত। তাহলে চলুন ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার সহবাসের দোয়াটি জেনে নিই :

بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
উচ্চারনঃ ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’


অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তোমার নামে শুরু করছি। তুমি শয়তান থেকে আমাদের দূরে রাখ। আমাদের এই মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে, সে সন্তাকেও শয়তানের ধোকা থেকে দূরে রাখ‌।


হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে মিলনের পূর্বে যদি সহবাসের দোয়া পড়ে তাহলে তাদের কিসমতে যদি কোন সন্তান থাকে তাহলে শয়তান সেই সন্তানের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

ইসলামিক সহবাসের পজিশন

আমরা সবাই কম বেশি একটা একটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকি যে কোন পজিশনে সহবাস করবো, কোন দিক দিয়ে ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন হালাল। তাহলে চলুন দেখে নেই ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার পজিশন সম্পর্কে আল্লাহতালা ও নবীগণ কি বলেছে:

ইসলামিক পদ্ধতিতে সহবাসের পজিশনের তেমন কোন বাধা নেই।
তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র। তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে গমন কর, যেভাবে চাও।(সূরা বাক্বারা- ২২৩)


আপনি আপনার স্ত্রী সাথে যেভাবে খুশি সেভাবেই সহবাস করতে পারেন। আপনি চাইলে শুয়ে, বসে, দাড়িয়ে, স্ত্রীকে আপনার উপরে বা আপনি স্ত্রীর উপরে হয়ে সহবাস করতে পারেন। তবে সহবাসের পথ হবে একটাই যোনিপথ। স্ত্রী মলদ্বারে সহবাস বা যৌনাঙ্গ প্রবেশ করা যাবে না।ইসলামে শুধুমাত্র আপনার তৃপ্তিকেই গুরুত্ব দেয় নি আপনার স্ত্রীর তৃপ্তিকেও গুরুত্ব দিয়েছে। তাই শুধুমাত্র আপনার সুখের কথা চিন্তা করলে হবে না আপনার স্ত্রী হ্যাপি কিনা সেটা খেয়াল করতে হবে। বেশিরভাগ পুরুষরাই নারীদের যৌন তৃপ্তির প্রতি নজর দেয় না এর ফলে তাদের বৈবাহিত জীবনের পাশাপাশি যৌন জীবনও সুখ নেই।


সহবাসের সময় স্বামী আনন্দ পাচ্ছে স্ত্রীর পাচ্ছে না। আবার স্ত্রী আনন্দ পাচ্ছে স্বামী যাচ্ছে না এরকম কিছু করা যাবে না। দুইজনে দুইজনের ইচ্ছার উপর গুরুত্ব দিতে হবে তা না হলে দাম্পত্য জীবনে কোলাহলের তৈরি হবে। ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলনের জন্য দুজনে দুজনের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিলেই দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়া যাবে।

ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলনের সময় নারীর করণীয়

সাইদুল -খাতির বইতে ইমাম ইবনুল জাওজি পরামর্শ দিয়েছেন, প্রত্যেকটি দম্পতির উচিত সহবাসের জন্য দিন বা রাতে একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা। তাহলে স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে পারবে। এটি তাদের তৃপ্তি বাড়াবে। এতে শারীরিক ও মানসিকভাবে দুইজনের কারো অপ্রস্ত থাকার সম্ভাবনা থাকবে না। এছাড়াও সহবাসের আগে নারীদের কিছু করণীয় আছে সেগুলো হল:


১) পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা:

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্র থাকা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। মুসলিমদের প্রধান ইবাদত সালাতের প্রধান শর্ত হচ্ছে পবিত্রতা। পবিত্রতা আল্লাহর সন্তুষ্ট এনে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ তাওবা কারীদের ভালবাসেন। ভালোবাসে অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের। নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। তাই প্রত্যেকটি মুসলিমেরই বিশেষ করে বিবাহিত অবস্থায় পবিত্র থাকা জরুরী। কিন্তু দেখা যায় অনেক নারী ঘরে ও স্বামীর সামনে পিছনে পরিষ্কার হয়ে থাকে না। কিন্তু তারা যদি বাইরে কোথাও যায় কোন অনুষ্ঠানে যায় তাহলে অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়।

২)অলংকার:

স্ত্রীর সাজ সজ্জার মধ্যে গহনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্ত্রী চাইলে মেকআপ লিবিসটিক ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু সবচাইতে ভালো হয় যদি পায়ে মেহেদী আর চোখে কাজল দেয়। কারণ এটি সুন্নাহ থেকে বর্ণিত।


৩)পোশাক-আশাক:

সহবাসের জন্য ছোট ছোট পোশাক বা অন্তর্বাস করে স্বামীর সামনে আসা যাবে। এগুলো ধার্মিকতার পরিপন্থী নয়। নিজেকে আর নিজের স্বামীকে পূত-পবিত্র করার বিশুদ্ধ নিয়তে এমনটা করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে অবশ্যই তা হতে হবে শুধু স্বামীর জন্য। অন্য কোন তৃতীয় পক্ষ সেখানে কোনভাবেই উপস্থিত থাকতে পারবেনা।


৩) সুগন্ধি:

মানুষের মনকে আন্দোলিত করতে সুগন্ধি লক্ষণীয় প্রভাব ফেলে। এটাই মানুষের স্বভাব। সব নবীদের অভ্যাস ছিল গায়ে সুগন্ধি লাগানোর। নবী বলেছেন, ‘চারটি জিনিস নবীদের চিরচারিত সুন্নত। সুগন্ধি ব্যবহার,লজ্জা, মিসওয়াক, বিয়ে’। (সহিহ বুখারী ৫৫৮৫)। স্বামী স্ত্রীর অন্তরঙ্গের সম্পর্কের সময়ও সুগন্ধির অবদান অনেক। সুগন্ধি আকর্ষণ বাড়ায়, সুগন্ধি আনন্দ বাড়ায়। সহবাসের সময় স্ত্রীর সাজ পোশাকের অংশ হিসেবে সুগন্ধি মাখা কর্তব্য। এক্ষেত্রে, স্বামীর যে সকল পারফিউম ভালো লাগে সেই সকল পারফিউম ব্যবহার করা উচিত।


৪) নারীসুলভ আচরণ:

সহবাসের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আগে স্ত্রীকে বুঝতে হবে তার নম্রতা ও লজ্জাশীলতা অর্থাৎ সামগ্রিক নারীসুলভ আচরণী স্বামীকে তার প্রতি আকৃষ্ট করে। এক্ষেত্রে রক্ষতা ও পুরুষালী আচরণ স্বামীকে উল্টো দূরে ঠেলে দেয়।


৫)ফিট থাকা:

স্ত্রীর সৌন্দর্যের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শরীরকে ফিটফাট রাখা ও সুস্থ রাখা। নিজেকে শারীরিকভাবে ফিট রাখা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এতে নিজের সুস্থ থাকার পাশাপাশি স্বামীর অনুরাগ পাওয়া যায়।

সহবাসের উত্তম সময়

ইসলামে স্বামী স্ত্রীর মিলন না করার কোন নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়নি। যদি অন্য কোন প্রকার বাধা না থাকে যেমন নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে এখনো পড়া হয়নি। আবার স্ত্রীর মাসিক চলছে ইত্যাদি ।তবে দম্পতি চাইলে দিনে রাতে যে কোন সময় সহবাস করতে পারে।


বিশুদ্ধ বর্ণনাতে এটা প্রমাণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম দিনের বিভিন্ন সময় তার স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়েছেন। দম্পতি যখন একজন আরেকজনের উপর টান অনুভব করবে তখনই সহবাস করা সম্ভব। যেহেতু স্বামী-স্ত্রীর কাজের সময়, ঘুম, সহবাসের ইচ্ছা এসবের মধ্যে পার্থক্য থাকবে তাই যেকোনো সময় সহবাস করা উচিত নয়। সহবাসে সবচাইতে উপযুক্ত সময় হচ্ছে যখন শরীর ও মন শান্ত থাকে। যে কোন ধরনের মানসিক দুশ্চিন্তা, ক্ষুধা, পিপাসা, অসুস্থতা মিলনের ইচ্ছাকে দূর করে দেয়। এমন সময় সহবাস শরীরের জন্য ক্ষতিকর।


অনেক আলেমরা বলেন, শেষ রাতের দিকে সহবাস করা ভালো। ওই সময়ে পেট খালি থাকে, আর ঘুমানোর আগে পেট ভরা থাকে। ভরা পেটে সহবাস করা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। তাই খাবার পুরোপুরি হজম হওয়ার আগ পর্যন্ত সহবাস করা ভালো নয়।

ইসলামে সহবাসের নিষিদ্ধ সময়

১) স্ত্রীর মাসিকের সময়
২) ইত্তেফাকের সময়
৩) রোজা থাকা অবস্থায়
৪) হজ্জের ইহরাম বাঁধা অবস্থায়.
৫) স্ত্রীর গর্ভপাত হওয়ার পর ৪০ দিন পর্যন্ত।

স্বামীর লজ্জাস্তান চোষা

স্বামীর লজ্জাস্তান মুখে নেওয়ার ব্যাপারটা যদি এমন হয় স্ত্রীর মুখে দেওয়ার পর স্বামীর বীর্য বা বীর্যপাত হওয়ার পূর্বের তরল যদি স্ত্রীর মুখের ভিতরে যায় তাহলে এটা পাপকাজ হবে। স্বামীর ক্ষেত্রেও এটাও একই। যদি এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে ওরাল সেক্স নিষেধ।ইচ্ছাকৃতভাবে অপবিত্র কিছু গিলে ফেলার ইসলামে অনুমোদন নেই।


যদি যথেষ্ট সতর্কতার সাথে ওড়াল সেক্স করা হয় যেকোনোভাবেই যৌনরস মুখের ভেতরে যাবে না। যেমন লজ্জাস্থানের হালকা চুম্বনের অনুমোদন আছে। কিন্তু ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার কাজটা অশোভন ও অপছন্দের।

সহবাসের পর ফরজ গোসলের নিয়ম

বীর্যপাতের পর শারীরিক যে অপবিত্রতার সৃষ্টি হয় তাকে জানাবা বলে। আর অপবিত্র ব্যক্তিকে জুনুব বলা হয়।জুনুব ব্যক্তি পবিত্র হওয়ার আগ পর্যন্ত কোরআন তেলাওয়াত, সালাত আদায়, ও মসজিদে প্রবেশ সহ অন্যান্য ইবাদত করতে পারবেনা।

এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা বলেন,’যদি তোমরা অপবিত্র অবস্থায় থাকো তবে ভালোভাবে নিজেদের পবিত্র কর’ আল কোরআন-৭৫:৩৬-৪০
নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন’প্রতিটি চুলের নিচেও নাপাকি থাকে তাই চুলগুলো ভালোমতো ধোও। ভালোভাবে শরীর পরিষ্কার করো।


যদি পুরুষের লজ্জাস্থান নারীর যৌনি পথে প্রবেশ করে কিন্তু বীর্যপাত হয়নি তবুও দুজনের ফরজ গোসল করতে হবে। মিলন ছাড়া যৌন উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হলে যেমন গোসল ফরজ ঠিক তেমনি বীর্যপাত না হলে শুধু মিলনের কারণে গোসল ফরজ। ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন, সহবাসের পর স্বামী স্ত্রী দুজনে গোসল করবে। ঘুমের মধ্যে যদি বীর্যপাত হয় তাহলে গোসল করতে হবে।

সহবাসের পরে করনীয়


ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলনের ক্ষেত্রে সহবাসের পরেই সহবাসের সকল কাজ শেষ হয়ে যায় না। ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন, সহবাসের পরে ই এমন কিছু কাজ থাকে যা সহবাসের অংশ। চলুন দেখেনিই ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন, সহবাসের পরে করণীয় কাজগুলো:


১) প্রেমাদর:

সহবাসের পর পর অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলা ঠিক নয়। বরং কিছুক্ষন ওই অবস্থায় থাকলে বিশেষ করে স্ত্রী তার নিজের চাহিদা পূরণ করে নিতে পারবে। ইসলাম আমাদেরকে সব সময় একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীলতা ও ভালবাসার শিক্ষা দেয়। সহবাসের পর পর স্বামী যদি উঠে চলে যায় তাহলে স্ত্রীর স্বামীর পথে ভুল ধারণা জন্ম নিতে পারে।


২) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা:

সহবাসের পরপরই কাপড় বা টিস্যু দিয়ে নিজেদের মুছে ফেলতে হবে। এক্ষেত্রে একটি আলাদা চাদর বিছিয়ে রাখা সবচাইতে ভালো। সহবাসের পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরপরও অনেক দম্পতি এটা নিয়ে হেলাফেলা করে। এজন্য অন্তর মুহূর্তের আগে বিছানার চাদর অন্য একটি বিছিয়ে নিতে হবে। এবং যে কাপড়ে যৌন রস লাগবে সেই কাপড় ধুয়ে ফেলতে হবে।


৩) প্রসাব:

ডাক্তারা সহবাসের পর প্রসাব করতে উৎসাহ দেন। এতে লজ্জাস্থানের ভিতরে কোন বীর্য থাকলে তা বের হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে ধোয়ার সময় প্রচুর ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন না এতেই থাকতে স্বাস্থ্যঝুকি থাকতে পারে।

৪) ফরজ গোসল:

সহবাসের ফরজ গোসল করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সহবাসের পর স্বামী স্ত্রীর উভয় অপবিত্র হয়ে থাকে এজন্য তাদের ফরজ গোসল করা দরকার।

সহবাসে হারাম ও মাকরুহ কাজ


চলুন দেখে নেই সহবাসে হারাম ও মাখরুহ কাজগুলো:
১) মাসিকের সময় মিলন
২ )কোন সঠিক কারণ ছাড়া সহবাসের জন্য স্ত্রীর অস্বীকৃতি জানানো ।
৩)প্রকাশে প্রেম ও অন্তরঙ্গ হওয়া
৪) সহবাস থেকে স্ত্রীকে বঞ্চিত করা।
৫) ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রীর দুধ পান।
৬) বাদ্যযন্ত্রের সাথে যৌন উত্তেজক নৃত্য
৭) উত্তেজনার জন্য পর্নোগ্রাফি দেখা
৮) প্রসাব নোংরা বস্তু থেকে যৌন আনন্দ লাভ
৯) পায়ুপথ দিয়ে মিলন।
১০) অন্তরঙ্গ মুহূর্তে অন্য কাউকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করা।
১১) সহবাসের সময় একজন আরেকজনের ছবি তোলা বা ভিডিও করা।
১২) ওরাল সেক্স
১৩) নিজেদের অন্তরঙ্গের মুহূর্তের কথা অন্যজনের কাছে বলা।

সবশেষে,


বৈবাহিক জীবন সুখী রাখতে সঠিক নিয়মে ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন, সহবাসের কোন বিকল্প নেই। এজন্য ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার পদ্ধতিতে যে সকল নিয়ম-কানুন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এগুলো পালন করার চেষ্টা করুন। ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন এই সকল নিয়মকানুন সঠিকভাবে পালন করলে আপনার দাম্পত্য জীবন সুখী হবে।

এছাড়াও সহবাসের সময় যে ভুল ত্রুটি হয়, এই ভুলত্রুটি থেকে যে পাপ হয় সেগুলো থেকেও মুক্তি পাবেন। এবং আল্লাহর রহমতে নেক সন্তানের মাতা – পিতা হবেন। প্রিয় দর্শক আজ আপনাদের মাঝে ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন করার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করি আজকের ইসলামিক উপায়ে দীর্ঘ সময় মিলন আর্টিকেলটি থেকে আপনি কিছুটা হলে উপকৃত হয়েছেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ|

Read more: এসএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ করার নিয়ম ও রেজাল্ট ২০২৪

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top